Monday, August 30, 2021

সংশোধন আর সম্বোধন এক কথা নয়...

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ : পর্ব-০২
নিগার, 
সেন্টমার্টিন। হোটেল প্যারাডাইসের বারান্দা বসে যখন সমুদ্রের সাথে চাঁদের জোসনার মিতালী উপভোগ করতে ছিলাম তখন তুমি আমার ডান ঘাড়ের উপর দুই হাত রেখে কানের কাছে যে আর্তনাথ প্রকাশ করে ছিলে সে কথা নিশ্চয় এখনো ভুলে যাওনি? 
সমুদ্রের হিমশীতল বাতাস যখন তোমার শরীরকে ক্রমশ: ক্লান্ত করে ছিল তখন কাঁপতে কাঁপতে আমার শার্টের বোতাম খুলে নিজের মুখটা আমার বুকে লুকিয়ে নিঃশ্বাস নিতে চেয়ে ছিলে। তা কি আজও মনে পড়ে?
গভীর রাত পর্যন্ত আমরা সাগর পাড়ে এক ফুট ব্যবধানে যখন বসে তোমার করুণ জীবনের গল্প আমাকে শোনাতে শোনাতে দূরত্বের ব্যবধান কমিয়ে তোমার ডান হাতটা আমার পিঠের উপর দিয়ে পেটের ডান পাশে রেখে নিজেকে আমার মাঝে বিসর্জন দিতে- এটা মনে হয় কোন কাল্পনিক দৃশ্য নয়? 
কি ভুলে গেলে সেই কথা- যার কন্ঠস্বর তোমার কানের পর্দা স্পর্শ না করলে ঘুমতে পারতে না। আমার সেই চিরাচিত স্বভাব ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ না বললে তোমার দু’চোখের পাতা এক হতো না? 
নিশ্চয় এটা অবিশ্বাস করবে না- আমিই তোমার জীবদ্দশায় একমাত্র ব্যক্তি ‘যে আঘাত নয় বরং আঘাতের চিহ্নে চুম্বন খেয়ে সুখে এনে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম’। কি ভুলে গেলে সেই কথা? নাকি এসব বাক্য শুধু ভিউয়ার্সের মনোরঞ্জন মাত্র!
যাক, যা মনে করেন। মূল কথায় আসি। 
কাউকে সম্বোধন করার পূর্বে একটু ভেবে নিবেন তার সাথে আপনার সর্বশেষ সম্পর্ক কি। তার পর সেই সর্বশেষ সম্পর্কের উপর নির্ভর করে ঐ ব্যক্তিকে সম্বোধন করবেন। কাউকে তিরস্কার করে কিংবা ব্যাঙ্গ করে কথা বলার অধিকার নিশ্চয় কেউ কাউকে দেয় না। 
ভালো থাকার কারণ; জানতে চেয়েছিলেন। উত্তরটা খুব সহজ (!) একটা লোক সম্পর্কে আপনাকে সর্তক করেছিলাম। বারণ করেছিলাম ওর সাথে না যেতে। ওয়াদাও করেছিলেন আর কখনো যাবেন না। 
যখন প্রমাণ দিলাম ‘যে আপনি ওয়াদা’ ভঙ্গ করেছেন। তখন আপনি একটি ভয়েজ ইউজ করেছিলেন। মনে করতে পারেন সেই ভয়েজ থেকে আমি আমার ভালো থাকা শিখে গেছি।  

Thursday, August 19, 2021

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ : পর্ব-০১

 হৃদয়ে রক্তক্ষরণ : পর্ব-০১

নিগার,
শরৎ এসেছে। কাঁশবন এখনো সাদা মেঘের ভেলায় রূপ নেয়নি। কিন্তু মনটাতে বর্ষার কালো মেঘের ঘনঘটা। সত্যি বলতে কি! তোমাকে বিরক্ত করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা ছিল না। যতটা আঘাত বুকের ভেতরে জমা রেখে চলে গেছো, সেখান থেকে তোমার প্রতি কোন অক্ষর প্রকাশিত হবে তা আমার মনের ঘরে জমা নেই।
তবে তোমাকে মনে পড়ার একটা কারণ হলো- যখন তুমি স্বার্থপরের মতো চলে যাও, তখন কিছু দিকনির্দেশনা আমাকে দিয়ে ছিলে। আর বলে ছিলে, এগুলো কখনো করতে যেও না। তাহলে তুমি শুধু আঘাত পাবে, হয়তো সে আঘাত তোমাকে নিঃশেষ করে দিবে। তুমি অল্পতেই মানুষকে বিশ্বাস করো। যা কখনো ঠিক নয়; মনে রাখবে হাসির মাঝেও স্বার্থের ছায়া থাকতে পারে। তিনটি চাওয়ার মধ্যে একটি ছিল এরকম। আমি তোমার কাছে ওয়াদা করিনি তবে, ভেবে ছিলাম তোমার তিনটা চাওয়া আমি রক্ষা করবো। যেখানে তোমার নয়; আমার স্বার্থ ও ভবিষ্যৎ জড়িত।
নিগার,
স্বভাবে যে চোর। সে অনেক অভিনয় করতে পারে। ক্ষুধার অভিনয়। পেট ব্যাথার অভিনয়। মাথা ব্যাথার অভিনয়। অজ্ঞান হওয়ার অভিনয়। কথিত চোর যে অভিনয়ই করুক না কেন; তার উদ্দেশ্য থাকে একটাই কাঙ্খিত জিনিসটি চুরি করে হাতিয়ে নেয়া। আমরাও মানব জাতি কিছু অভিনয়কে এমনভাবে বিশ্বাস করে ফেলি; যখন নিজের কোন কিছু খোয়া যায় তখন বুঝি বিশ্বাসের ঘরে চুরি হয়েছে। একটা দীর্ঘ শ্বাস নেয়া-ফেলা ছাড়া কোন কিছু করার থাকে না। 
ছোট একটা গল্প শোন, আমার বন্ধু নিলয়ের বাড়ি কুয়াকাটা সাগর পাড়ে। ঝড়-তুফান আর জলচ্ছাসের মধ্যে বসবাস। অবসর সময় পেলে সে সাগরে মাছ ধরে। সম্প্রতি নিলয় তার এক বন্ধুর বৌদলতে রাজশাহী গিয়েছে আম কিনতে। সে নাকি আমের ব্যবসা করবে। এখন নিলয় অনলাইনে মালেয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, বাহরানে আম সরবরাহ করছেন। চিন্তা-চেতনা আর পোশাকে মনে হয় না; নিলয় সাগর পাড়ের ছেলে। আগে তার কার্যকলাপে তাকে আমি নেরুমাইন্ডের লোক বলে ক্ষ্যাপাতাম। সে রাগও করতো না। কারণ- তার মধ্যে নেরুমাইন্ডের উপাদানগুলো বিদ্যমান ছিল। আজ তার সাথে কথা হলো- কথা প্রসঙ্গে নিলয় আমাকে একটা উচিত শিক্ষাটা দিল। উল্টো নিলয় আজ আমাকে বললো- আমি এখন ভরাটমাইন্ডের লোকদের সাথে চলাফেরা করি। আমাকে নিরুমাইন্ডের লোক বলবি না! 
আসলে প্রতিউত্তরে নিলয়কে কিছু বলার নেই। আমি তাকে নেরুমাইন্ডের লোক হিসেবে জানতাম; আর তা নিলয় বিশ্বাস করতো বলে; সে আজ আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, সে এখন নেরুমাইন্ড থেকে ভরাটমাইন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছে। নিলয়ের ভাষ্য থেকে এটাই আমার বড় প্রাপ্তি কিংবা স্বার্থকতা- ‘সে যে নেরুমাইন্ডের লোক ছিল; সেটা আজও স্বীকার করলো। 
নিগার,
মনে মনে ভাবছো, এ গল্প শোনানোর জন্য আমার পেছনে এত সময় ব্যয় করার কি দরকার ছিল? ‘তার কি কোন খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই?’। তোমার ভাবনাতে আমি দ্বিমত পোষণ করবো না। তবে এ গল্পের মধ্যে লুকিয়ে আছে অদৃশ্য একটি চরম সত্য উপলব্ধি। লেখাটা পড়ার পর রাতে যখন ঘুমতে যাবে, তখন মনে মনে চিঠি-টাকে স্মৃতিচারণ করতে চেষ্টা করো। তাহলে কিছুটা হলেও তোমার হিসাব মিলবে। আর যদি নাই হিসাব মিলে তাহলে বেশিক্ষণ সময় ব্যয় করো না। অন্য কাজে মন দিও। মন-শরীর দুটোই ভালো থাকবে। অন্য আরেকদিন না হয় অদৃশ্য চরম সত্যটা নিয়ে লিখবো।
ইতি,
যে নামে তুমি জানো...

আগষ্ট মাসের চিঠি-০২

 আগষ্ট মাসের চিঠি-০২

... নাজমুল করিম ফারুক
মেঘশ্রী,
তোমাকে নিয়ে লেখতে গেলে লেখা শেষ হয় না। কিন্তু বেশি লেখাতে বেশি বিভেদ-বিচ্ছেদ ঘটায়। তোমাকে যেন চিঠি না লিখি প্রথম থেকে বারণ করা আছে। আজকের ডিজিটাল (ইমু, হোয়াটঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইনবক্সে) যুগে এত লম্বা চিঠি পড়ার ধর্য্য কারো থাকে না। তার পরও লেখতে হয়।
জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে পুলিশের এক সদস্য প্রকাশ্যে গুলি করে একজন শিশু, নারী, পুরুষ তিনজনে হত্যা করেছিল। সেদিন বিকালেই লেখতে চেয়েছিলাম। যখন লেখতে বসলাম তখন মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে গেল ‘পরীমণির লঙ্কাকান্ড’। কি যে কান্নাকাটি! বোর্ড ক্লাবে উনার সাথে ‘কি যেন’ ঘটে গেছে। যাক পরে আর লেখতে পারলাম না। দীর্ঘদিন আর লেখাতে মন বসেনি। হেলেনা, পিয়াসা, মৌ আর পরীমণিদের রঙ্গশালার দৃশ্যপট লেখার আগ্রহ নিমেষ করে দিয়েছে।
তিন কিংবা চারদিন আগে দুপুর বেলায় দেখলাম পশ্চিম আকাশে রংধনু পাখা মেলেছে। পশ্চিম আকাশে রংধনুর এমন উদয় দ্বিতীয় বারের মতো আমার চোখে পড়েছে। একটা গল্পের ইতিহাসের দৃশ্যপট অনেক ভাবে পরিবর্তন হয়। যেমনটা হচ্ছে আজ। তাই আজ আপনি বলে সম্বোধন করতে যাচ্ছি। কারণ- কথায় কথায় যখন আপনার মুখের ভাষা থেকে বিশ্রী গন্ধ বের হয়; মানুষকে পশুর মতো ভাবতে থাকেন, তখন চেনা মুখটাও অচেনা হয়ে যায়। এটা নতুন কিছু নয়।
শিক্ষা নাকি মানুষকে ভদ্রতা, ন¤্রতা, শিষ্টাচার শেখায়? আপনার সাথে কথা বললে তার লেশমাত্র পাওয়া যায় না। সবচেয়ে বড় কথা কি জানেন? বড় শয়তানগুলোর সাথে ছোট শয়তান যুক্ত হলে এখানে পন্ডিত্বের পাল্লাটা ভারি হয়ে যায়। হাজার হাজার বাটখেরা দিলেও কোন কাজ হয় না। যাক, এদিকে আর যেতে চাই না। আপনার যেমন আমার, আমার সংস্পর্শ সকলের প্রতিটি কথা মনে মনে আছে, তেমনি আপনার ও আপনার সংস্পর্শ সকলের কথাও আমার মনে মনে আছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকবে। ইনশাআল্লাহ।
একটা নতুন খবর না দিলে নিজের ভেতর অতৃপ্তি থেকে যাবে। বেশ কয়েক মাস আগ থেকে নতুন একজনের আগমন ঘটেছে। আমার জরার্জীণ কুটিরের দরজায়। আলিসা। ওরফে আলিসা জেরিন। এখন আমি তাকে নিয়ে খুব ব্যস্ত। এতটাই ব্যস্ত যে, আগামী ৪/৫ মাসের মধ্যে যদি একটা ব্যবস্থা করতে না পারি। তাহলে এতদিন বুকের ডান পাজরে যে ব্যাথাটা অনুভব হয়ে আসছে তা বামপাশেও ছড়িয়ে যাবে।
দোয়া করবেন। মেঘশ্রী নামের মেঘবিহীন আকাশে যেন আলিসা ‘সৎ কিংবা সত্যবাদী’ রূপে আলোকিত হয়।